ডিম পাড়া মুরগির খাবার তালিকা | পুষ্টিকর খাদ্য পরিকল্পনা
প্রিয় পাঠক, হয়তো আপনি ডিম উৎপাদনের জন্য মুরগি পালন করছেন। কারন আপনি বুঝতে পারছেন না আপনার ডিম পাড়া মুরগির খাবার তালিকা এবং কি খাওয়ালে মুরগির বেশি ডিম উৎপাদন হবে। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ আজকের পোস্টে ডিম পাড়া মুরগির খাবার তালিকা তুলে ধরা হবে।
তাই আপনি যদি সঠিক মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে মুরগির সঠিক ডিম উৎপাদন করতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
ভূমিকা
ডিম পাড়া মুরগির খাবার তালিকা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার তালিকা মুরগির স্বাস্থ্য ও উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। একটি সুষম খাবার তালিকা মুরগির ডিম পাড়ার হার অনেক অংশে বাড়িয়ে দেয় এবং মুরগির শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। মুরগির খাদ্য তালিকা তৈরি করার সময় পুষ্টির পরিমাণ ও বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। অবশ্যই, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সরবরাহকারী খাবারগুলো মুরগির খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।
এই খাবারগুলি মুরগির সঠিক বৃদ্ধি ও ডিমের মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি মানসম্পন্ন খাবার মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সঠিক খাদ্যতালিকা মুরগির ডিম পাড়ার সময়কাল বৃদ্ধি করে এবং উৎপাদন খরচ কমায়। তাই, সঠিক খাদ্যতালিকা মুরগির মালিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমরা, ডিম পাড়া মুরগির সঠিক খাবার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
মুরগির প্রয়োজনীয় পুষ্টি
প্রোটিনের গুরুত্ব
মুরগির ডিম পাড়ার জন্য প্রোটিন একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। প্রোটিন মুরগির ডিমের উৎপাদন বাড়ায় এবং মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখে। মনে রাখবেন, প্রোটিনের অভাব হলে ডিম পাড়া কমে যেতে পারে এবং মুরগির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে
প্রোটিনের উৎস হিসেবে নিচে উল্লেখ করা খাদ্যগুলো মুরগির খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যেমন,
- সয়াবিন মিলঃ উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং মুরগির জন্য খুবই উপকারী।
- মাছের গুঁড়াঃ প্রোটিনের পাশাপাশি ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে।
- মাংসের গুঁড়াঃ মুরগির জন্য প্রোটিনের একটি ভালো উৎস।
ভিটামিন এবং খনিজ
মুরগির ডিম পাড়ার জন্য ভিটামিন এবং খনিজও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। ভিটামিন এবং খনিজ মুরগির স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং তাদের ডিম পাড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
নিচে উল্লেখ করা ভিটামিন এবং খনিজ মুরগির খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যেমন,
- ভিটামিন এঃ চোখের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ভিটামিন ডিঃ হাড় এবং ডিমের খোলার শক্তি নিশ্চিত করে।
- ক্যালসিয়ামঃ ডিমের খোলার মজবুতির জন্য অপরিহার্য।
- ফসফরাসঃ মুরগির হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
একটি সাধারণ ভিটামিন এবং খনিজ খাদ্যতালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো,
ভিটামিন/খনিজ - পরিমাণ (মি.গ্রা/কেজি)
- ভিটামিন এ - ১০,০০০
- ভিটামিন ডি - ২,০০০
- ক্যালসিয়াম - ৩.৫%
- ফসফরাস - ০.৪%
ডিম পাড়া মুরগির খাদ্য
ডিম পাড়া মুরগির খাদ্য নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার মুরগির স্বাস্থ্য এবং ডিম পাড়ার হার বাড়ায়। এই অংশে আমরা ডিম পাড়া মুরগির খাদ্য তালিকা নিয়ে আলোচনা করব।
ধানের ব্যবহার
ধান মুরগির খাদ্যের প্রধান উপাদান। মূলত, ধান মুরগির শক্তির উৎস। ধান থেকে মুরগিরা প্রয়োজনীয় ক্যালরি পায়। নিয়মিত ধান খাওয়ালে মুরগির ডিম পাড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ধানের উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো।
ধানের উপকারিতা,
- শক্তি বৃদ্ধিঃ ধান মুরগির শক্তির উৎস।
- স্বাস্থ্য রক্ষাঃ ধান মুরগির হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- ডিম পাড়ার হারঃ ধান খাওয়ালে ডিম পাড়ার হার বৃদ্ধি পায়।
তবে মনে রাখবেন শুধুমাত্র ধান খাওয়ানো উচিত নয়। অন্যান্য খাদ্যও মুরগির খাবার তালিকায় রাখা উচিত।
গম ও ভুট্টা
গম ও ভুট্টা মুরগির খাদ্যের আরেকটি প্রধান উপাদান। কারণ, গম ও ভুট্টা মুরগির পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। গম ও ভুট্টার উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো।
গমের উপকারিতা,
- প্রোটিনঃ গম মুরগির প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।
- ভিটামিনঃ গমে প্রচুর ভিটামিন থাকে।
- স্বাস্থ্য রক্ষাঃ গম মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ভুট্টার উপকারিতা,
- শক্তিঃ ভুট্টা মুরগির শক্তির উৎস।
- কার্বোহাইড্রেটঃ ভুট্টা মুরগির কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ করে।
- স্বাদঃ মুরগি ভুট্টা খেতে পছন্দ করে।
গম ও ভুট্টা মিশ্রণ মুরগির পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং ডিম পাড়ার হারও বৃদ্ধি পায়।
কৃত্রিম খাবার ও সাপ্লিমেন্ট
প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট
প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট মুরগির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। প্রোটিন মুরগির শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে। এটি মুরগির বৃদ্ধির জন্যও প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক
ডিম পাড়া মুরগির জন্য প্রোটিন সাপ্লিমেন্টের কয়েকটি উদাহরণ নিচে উল্লেখ করা হলো,
- সয়াবিন মিল: সয়াবিন মিল একটি সমৃদ্ধ প্রোটিন উৎস। এটি মুরগির পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়ক।
- ফিশ মিল: ফিশ মিল উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। এটি মুরগির ডিম উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক।
- রক্তের মিল: রক্তের মিল মুরগির প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। এটি মুরগির শরীরের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
অবশ্যই, প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট মুরগির খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে করে মুরগির স্বাস্থ্য এবং ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
মিনারেল মিক্স
মিনারেল মিক্স মুরগির জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান। মিনারেল মিক্স মুরগির হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, মিনারেল মিক্স ডিমের খোসা শক্ত করতেও খুবই কার্যকরী।
মিনারেল মিক্স এর কিছু উপাদান নিচে উল্লেখ করা হলো,
- ক্যালসিয়াম: ক্যালসিয়াম মুরগির হাড় ও ডিমের খোসা শক্ত করতে সাহায্য করে।
- ফসফরাস: ফসফরাস মুরগির শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি ডিমের সঠিক গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ম্যাগনেসিয়াম: ম্যাগনেসিয়াম মুরগির স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজন।
তাই অবশ্যই মিনারেল মিক্স মুরগির খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে করে মুরগির স্বাস্থ্য ও ডিমের গুণগত মান বৃদ্ধি হবে।
তাজা খাবারের গুরুত্ব
সবজির প্রভাব
সবজি মুরগির জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর। তাই মুরগির পুষ্টির অভাব দূর করতে খাদ্যে সবজি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। মূলত, সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। আর ভিটামিন এবং খনিজ মুরগির স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
নিয়মিত সবজি খাওয়ানোর ফলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও, মুরগির ডিমের গুণগত মান উন্নত হয়। নিচে কিছু সবজির তালিকা তুলে ধরা হলো যেগুলো আপনি মুরগিকে খাওয়াতে পারেন। যেমন,
- গাজরঃ বিটা-ক্যারোটিনের ভালো উৎস। এটি মুরগির চোখের জন্য উপকারী।
- ব্রোকলিঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ফাইবার থাকে।
- পালং শাকঃ আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
এছাড়াও, অন্যান্য সবজিও উপকারী হতে পারে। যেমন, টমেটো, শসা এবং কুমড়া।
ফলমূলের উপকারিতা
ফলমূল মুরগির খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। কারণ, ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে।
ফলমূল মুরগির শরীরের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। যেমন,
ফলমূল - উপকারিতা
- আপেল - ভিটামিন এ এবং সি এর ভালো উৎস।
- কলা - পটাশিয়ামের ভালো উৎস। এটি মুরগির পেশীর জন্য উপকারী।
- বেরি - অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ফলমূল মুরগির স্বাস্থ্যের জন্য কবি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তাই নিয়মিত মুরগিকে ফলমূল খাওয়ানো উচিত।
পানি ও ডিম উৎপাদন
ডিম পাড়া মুরগির জন্য সঠিক খাবার তালিকা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানি ও ডিম উৎপাদন এই প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মুরগির স্বাস্থ্য ও ডিম উৎপাদনের জন্য সঠিক পানির পরিমাণ ও খাবার প্রয়োজন। সঠিক খাবার ও পানির যোগান না পেলে মুরগির ডিম উৎপাদন ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
পানির পরিমাণ
মুরগির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি সরবরাহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই, প্রতিদিন তাদের পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। যেমন,
- প্রতি মুরগির জন্য দৈনিক ২০০ - ২৫০ মিলিলিটার পানি প্রয়োজন।
- গরমের সময় পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
- পানির মান ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
আর হ্যাঁ অবশ্যই, মুরগির পানির পাত্র সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত। পানির পাত্রে কাদা বা ময়লা জমলে তা ডিম উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক পরিমাণ ও মানের পানি সরবরাহ করলে মুরগির স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
ডিম উৎপাদনে প্রভাব
খাদ্য ও পানির মান ডিম উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলে। সঠিক খাবার ও পানি না পেলে মুরগির ডিম উৎপাদন কমে যেতে পারে। ডিম উৎপাদন বাড়াতে যা যা করা দরকার উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো,
- প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করতে হবে।
- মুরগির খাবারে সবুজ শাকসবজি এবং শস্য যোগ করতে হবে।
- মুরগির খাঁচা ও পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে।
মুরগির মানসম্পন্ন খাবার ও পানি সরবরাহ করলে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা ডিম উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
খাবার প্রস্তুতির পদ্ধতি
মিশ্রণ কৌশল
মিশ্রণ কৌশল হলো খাবার উপাদানগুলো সঠিকভাবে মেশানো। এতে করে প্রতিটি উপাদান সমানভাবে বিতরণ হয়। উচ্চ মানের খাবার প্রস্তুতির জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করা উচিত। যেমন,
- প্রথমে, শুষ্ক উপাদানগুলো একসাথে মিশাতে হবে। যেমন, ভুট্টা, গম, চালের কুঁড়া।
- এরপর, প্রোটিন উপাদানগুলো যোগ করতে হবে। যেমন, সয়াবিন মিল, মাছের গুঁড়া।
- এবার, ভিটামিন এবং খনিজ যোগ করতে হবে। যেমন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস।
- সবশেষে, তেল এবং পানি যোগ করে সবকিছু মেশাতে হবে।
মিশ্রণ সঠিকভাবে না হলে খাবারের গুণগত মান কমে যায়। তাই, সমানভাবে মেশানো নিশ্চিত করতে হবে। অটোমেটিক মিক্সার ব্যবহার করলে ভাল হয়। এতে সময় এবং শ্রম উভয়ই বাঁচে।
পরিবেশন পদ্ধতি
পরিবেশন পদ্ধতি মুরগির খাবার গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সঠিক পরিবেশনে মুরগির খাদ্য গ্রহন বৃদ্ধি পায়। কিছু পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,
- প্রতিদিন একই সময়ে খাবার দিতে হবে।
- খাবার তাজা এবং পরিষ্কার রাখতে হবে।
- মুরগির বয়স এবং ওজন অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ ঠিক করতে হবে।
- খাবার বিন সবসময় পূর্ণ রাখতে হবে।
- খাবার পানিতে ভিজতে দেয়া যাবে না।
সঠিক পরিবেশন পদ্ধতি মুরগির উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং মুরগির স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এর সাথে সাথে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। অবশ্যই, প্রতি ১০টি মুরগির জন্য একটি পানির পাত্র রাখতে হবে।
মুরগির খাবারের সময়সূচি
দৈনিক খাদ্য তালিকা
মুরগির দৈনিক খাদ্য তালিকা সঠিকভাবে মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিমাণে পুষ্টি সরবরাহ করতে হবে। নিচে উল্লেখ করা খাদ্য উপাদানগুলি মুরগির দৈনিক খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যেমন,
- মুরগির ফিডঃ বাজারে পাওয়া যায় এমন মানসম্মত ফিড ব্যবহার করুন।
- শস্যঃ গম, ভুট্টা, এবং চালের খুদ মুরগির জন্য উপযুক্ত।
- সবজিঃ পাতা, গাজর, এবং অন্যান্য সবজি মুরগির পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে।
- প্রোটিনঃ মাছের মাংস, সয়াবিন, এবং কৃমি প্রোটিন সরবরাহ করে।
মুরগির খাদ্য তালিকা প্রতিদিন নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত নয়। তবে, খাদ্যের পরিমাণ ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। নিচের টেবিলে মুরগির জন্য দৈনিক খাদ্যতালিকার একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো,
খাদ্য উপাদান - পরিমাণ (গ্রাম)
- মুরগির ফিড - ১০০
- শস্য - ৫০
- সবজি - ৩০
- প্রোটিন - ২০
মৌসুমি পরিবর্তন
মৌসুমী পরিবর্তনের সাথে সাথে মুরগির খাদ্য তালিকাতেও পরিবর্তন আনা দরকার। মূলত, শীতকালে মুরগির উষ্ণতা বজায় রাখতে বেশি ক্যালোরি প্রয়োজন হয়। আর গরমকালে মুরগির শরীর ঠান্ডা রাখতে হালকা খাদ্য দেওয়া উচিত।
শীতকালে মুরগির খাদ্য তালিকায় নিচে উল্লেখ করা উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যেমন,
- উচ্চ ক্যালোরি খাদ্যঃ শস্য, ভুট্টা, এবং তেলজাতীয় খাবার।
- উষ্ণ পানিঃ মুরগির পানির পাত্রে গরম পানি দিতে হবে।
- প্রোটিনঃ মাছের মাংস এবং সয়াবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
গরমকালে মুরগির খাদ্য তালিকায় নিচে উল্লেখ করা উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যেমন,
- হালকা খাদ্যঃ সবজি, ফল, এবং ঠান্ডা জল।
- কম ক্যালোরি খাদ্যঃ শস্যের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে।
- পানিঃ নিয়মিত ঠান্ডা এবং পরিষ্কার পানি দিতে হবে।
মৌসুমী পরিবর্তনের সাথে সাথে মুরগির খাদ্য তালিকা পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। এটি মুরগির স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই মুরগির স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ঠিক রাখতে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
সচরাচর জিজ্ঞাশিত প্রশ্ন এবং উত্তর (FAQ)
প্রশ্নঃ মুরগির ডিম পাড়ার জন্য কোন খাবার ভালো?
উত্তরঃ ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
প্রশ্নঃ দেশি মুরগি দিনে কত গ্রাম খাবার খায়?
উত্তরঃ একটি প্রাপ্তবয়স্ক দেশী মুরগি দিনে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম খাবার গ্রহণ করে।
প্রশ্নঃ কোন মুরগি ডিম পাড়ে বেশি?
উত্তরঃ লেয়ার মুরগি।
প্রশ্নঃ মুরগির মাংস বেশি খেলে কি হয়?
উত্তরঃ ওজন বৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি হার্ট এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্নঃ মুরগির সুষম খাদ্য কি?
উত্তরঃ যেমন,
- গম
- তিলের খৈল
- ভুট্টা
- শুঁটকি মাছের গুঁড়া
- ধান
- সয়াবিন মিল
- চাল
- সরিষার খৈল
- চালের কুড়াঁ
- শাকসবজি
- গমের ভুসি ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ মুরগির ভ্যাকসিনের নাম কি?
উত্তরঃ মুরগির ভ্যাকসিনের নাম হলো, বি সি আর ডি ভি এবং আর ডি ভি।
প্রশ্নঃ মুরগিকে দিনে কতবার খাবার দিতে হয়?
উত্তরঃ মুরগিকে দিনে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৪ বার দিতে হয়।
প্রশ্নঃ কোন দেশি মুরগির ডিম ভালো?
উত্তরঃ কারি প্রিয়া।
প্রশ্নঃ মোরগ ছাড়া কি মুরগি ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, মুরগী মোরগ ছাড়া ডিম পাড়ে।
প্রশ্নঃ মুরগি দ্রুত বড় করার উপায়?
উত্তরঃ পুষ্টিকর ও সুষম সাভার খাওয়ানোর মাধ্যমে মুরগি দ্রুত বড় করা যায়।
লেখকের মন্তব্য
আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি আপনাদের মাঝে ডিম পাড়া মুরগির খাবার তালিকা এবং পুষ্টিকর খাদ্য পরিকল্পনা সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধদের মাঝে শেয়ার করুন।
জাতে করে আপনার মতো আপনাদের বন্ধুরাও উক্ত পোস্ট পড়ে উপকৃত হতে পারে। আর সর্বশেষ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url