কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় কার্যকরী পরামর্শ

প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো কবুতর পালন করতে চান। এখন আপনি জানতে চান কোন জাতের কবুতর আপ্বনার জন্য ভালো হবে এবং বেশি বাচ্চা দেয়। তাহলে আপনি ঠিক জাইগাতেই এসেছেন। কারন, আজকের পোস্টের মধ্যে আমি কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এবং কবুতর পালনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
তাই আপনি যদি সঠিক তথ্য সম্পর্কে জেনে কবুতর পালনে লাভমান হতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।

ভূমিকা

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান অনেক কবুতরপ্রেমী। নির্দিষ্ট জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়ার পেছনে কিছু কারণ আছে। কবুতর পালনকারীরা সবসময় চান, তাদের কবুতরগুলো যেন বেশি বাচ্চা দেয়। কিছু জাত আছে, যেগুলো অন্য জাতের চেয়ে বেশি বাচ্চা দেয়। এর পেছনে রয়েছে জেনেটিক বৈশিষ্ট্য এবং সঠিক পরিচর্যা।

এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব, কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এবং কীভাবে তাদের সঠিক পরিচর্যা করতে হয়। এসব তথ্য আপনাকে সাহায্য করবে সঠিক জাতের কবুতর নির্বাচন করতে এবং তাদের সঠিকভাবে পালনে। চলুন, দেরি না করে শুরু করা যাক।

কবুতরের প্রজাতি

প্রধান প্রজাতির পরিচিতি

কবুতরের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। কিন্তু কিছু প্রজাতি খুবই জনপ্রিয়। এই প্রজাতিগুলি বেশি বাচ্চা দেয়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রজাতির পরিচিতি দেওয়া হলো। যেমন,

  • হোমার কবুতর: এই প্রজাতি খুবই দ্রুত বাচ্চা দেয়। সাধারণত প্রতি মাসে নতুন বাচ্চা হয়।
  • কিং কবুতর: বৃহত্তর আকারের এই কবুতর বেশি সংখ্যায় বাচ্চা দেয়। এদের বাচ্চা দ্রুত বড় হয়।
  • ফ্যান্টেল কবুতর: এই প্রজাতির কবুতরও জনপ্রিয়। এদের বাচ্চা সহজেই বেঁচে থাকে।

বিভিন্ন প্রজাতির বৈশিষ্ট্য

প্রজাতিভেদে কবুতরের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হয়। নিচে বিভিন্ন প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলো,

প্রজাতি - বৈশিষ্ট্য
হোমার কবুতর - দ্রুত বাচ্চা দেয়, প্রতি মাসে নতুন বাচ্চা হয়।
কিং কবুতর - বৃহত্তর আকার, বেশি সংখ্যায় বাচ্চা দেয়, বাচ্চা দ্রুত বড় হয়।
ফ্যান্টেল কবুতর - বাচ্চা সহজেই বেঁচে থাকে, দেখতে সুন্দর।

হোমার কবুতর দ্রুত বাচ্চা দেয় এবং কিং কবুতর বৃহত্তর আকারের হয়। ফ্যান্টেল কবুতর দেখতে সুন্দর এবং এদের বাচ্চা সহজেই বেঁচে থাকে।

কবুতরের প্রজনন প্রক্রিয়া

মৌসুমী প্রজনন

কবুতরের প্রজনন মৌসুম সাধারণত বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালে হয়। এই সময়ে আবহাওয়া উষ্ণ থাকে যা প্রজননের জন্য উপযুক্ত। অনেক কবুতর পালনকারী লক্ষ্য করেন, এই সময়ে কবুতরের প্রজনন হার বৃদ্ধি পায়।


প্রজনন মৌসুমের সময় কবুতর পালনকারীরা কিছু বিশেষ যত্ন নেন। যেমন,
  • পুষ্টিকর খাবার প্রদান করা
  • পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা
  • নিরাপদ এবং আরামদায়ক বাসস্থান নিশ্চিত করা
এছাড়াও, মৌসুমী প্রজননের সময় কবুতরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর কবুতরই ভালোভাবে প্রজনন করতে পারে। পর্যাপ্ত আলো এবং সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা প্রয়োজন।

যৌন প্রজনন আচরণ

কবুতরের যৌন প্রজনন আচরণ সাধারণত নির্দিষ্ট ধাপে ঘটে। প্রথমে পুরুষ কবুতর মহিলা কবুতরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। সে গর্জন ধ্বনি করে এবং পাখা মেলে নাচে।

যখন মহিলা কবুতর পুরুষ কবুতরকে গ্রহণ করে, তখন তারা জোড়া বাঁধে। এই সময়ে তারা একসাথে নিড়ানো এবং বসবাস করে। পরবর্তীতে মহিলা কবুতর ডিম পাড়ে এবং পুরুষ কবুতর ডিমগুলোর যত্ন নেয়।


কবুতরের প্রজনন আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তাদের প্রজনন হার বাড়ানো সম্ভব। সঠিক পরিবেশ এবং যথাযথ যত্ন প্রদান করলে কবুতরের প্রজনন হার বৃদ্ধি পায়।

বাচ্চা দেয়ার সংখ্যা

বিভিন্ন প্রজাতির তুলনা

কবুতরের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে বাচ্চা দেয়ার সংখ্যায় পার্থক্য রয়েছে। নিচে কিছু প্রজাতির তুলনা দেয়া হলো,

প্রজাতি - গড় বাচ্চার সংখ্যা
হোমার - ৮ - ১০টি 
কিং - ৬ - ৮টি
রেসার - ১০ - ১২টি
ফ্যান্টেইল - ৪  - ৬টি

হোমার প্রজাতির কবুতর প্রতি বছরে ৮ থেকে ১০টি বাচ্চা দেয়। কিং প্রজাতি গড়ে ৬ থেকে ৮টি বাচ্চা দেয়। রেসার প্রজাতির কবুতর সবচেয়ে বেশি বাচ্চা দেয়, যা প্রায় ১০ থেকে ১২টি। অন্যদিকে, ফ্যান্টেইল প্রজাতির কবুতর তুলনামূলকভাবে কম, ৪ থেকে ৬টি বাচ্চা দেয়।

বাচ্চার সংখ্যা নির্ধারণের উপাদান

বাচ্চার সংখ্যা নির্ধারণে অনেক উপাদান কাজ করে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিচে উল্লেখ করা হলো,
  • খাদ্য ও পুষ্টি: সুষম খাদ্য ও সঠিক পুষ্টি কবুতরের বাচ্চা দেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • পরিবেশ ও আবাসন: সঠিক পরিবেশ ও নিরাপদ আবাসন কবুতরের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্যকর ও রোগমুক্ত কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়।
  • বয়স: প্রজননক্ষম বয়সের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়।
  • জেনেটিক্স: জেনেটিক বৈশিষ্ট্যও কবুতরের বাচ্চা দেয়ার ক্ষমতা প্রভাবিত করে।
সঠিক খাদ্য ও পুষ্টি কবুতরের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, ও মিনারেল থাকা উচিত। পরিবেশ ও আবাসনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত আলো, বায়ু চলাচল, এবং পরিষ্কার পরিবেশ প্রয়োজন।


কবুতরের স্বাস্থ্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। রোগমুক্ত ও সুস্থ কবুতর বেশি বাচ্চা দিতে সক্ষম। এছাড়া, বয়সও একটি বড় উপাদান। কম বয়সী ও বৃদ্ধ কবুতর তুলনামূলকভাবে কম বাচ্চা দেয়।

জেনেটিক্সও কবুতরের প্রজনন ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। ভালো জেনেটিক্স সম্পন্ন কবুতর সাধারণত বেশি বাচ্চা দেয়।

কবুতর পালনের কৌশল

সঠিক পরিবেশের গুরুত্ব

কবুতরের প্রজননের জন্য সঠিক পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কবুতরের বাসস্থান পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।


সঠিক পরিবেশের জন্য কিছু টিপস নিচে উল্লেখ করা হলো,
  • প্রতিদিন কবুতরের খাঁচা পরিষ্কার করুন।
  • পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
  • খাঁচার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক থেকে মুক্ত রাখুন।
কবুতরের প্রজননের জন্য একটি নিরিবিলি পরিবেশ প্রয়োজন। খাঁচার স্থানে কোন বড় শব্দ যেন না আসে। অনেক সময় অতিরিক্ত শব্দ প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

খাবার ও পুষ্টির প্রভাব

কবুতরের প্রজননের জন্য সঠিক খাবার ও পুষ্টি প্রদান করা জরুরি। পুষ্টিকর খাবার কবুতরের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

পুষ্টিকর খাবারের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো,
  • গম ও ধান
  • মটরশুঁটি
  • ভুট্টা
  • সবজি ও ফল
  • ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট
একটি সুষম খাদ্য কবুতরের প্রজননের জন্য অপরিহার্য। প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবার প্রদান করুন। অতিরিক্ত খাবার দিলে কবুতরের ওজন বাড়তে পারে। এতে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়।

পানির গুরুত্ব: কবুতরের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে। পানি সবসময় পরিষ্কার ও তাজা রাখতে হবে।

সঠিক খাবার ও পুষ্টি প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। পুষ্টিকর খাবার ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ কবুতরের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

বাচ্চা উৎপাদনের সময়

বাচ্চা জন্মের সময়কাল

কবুতরের বাচ্চা জন্মানোর সময়কাল সাধারণত ১৮ থেকে ২১ দিন। এই সময়কালে কবুতরদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের তালিকা দেওয়া হলো,
  • কবুতরের বাসা পরিষ্কার রাখা
  • পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা
  • পর্যাপ্ত পানীয় জল নিশ্চিত করা
  • শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা
এছাড়াও, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে নীচের টেবিলটি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন,

তাপমাত্রা - প্রভাব
২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস - সর্বোত্তম
২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস - স্বাভাবিক
৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি - অস্বস্তিকর

এই সময়কালে, কবুতরদের বাহ্যিক চাপ থেকে দূরে রাখা উচিত। বাচ্চা জন্মানোর সময়কাল সফল করতে সঠিক পরিবেশ ও যত্ন অপরিহার্য।

জন্মের পর যত্ন

জন্মের পর বাচ্চাদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। প্রথমে, বাচ্চাদের উষ্ণ পরিবেশ দিতে হবে। নতুন বাচ্চাদের জন্য নিচের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। যেমন,
  • উষ্ণ ও পরিষ্কার বাসা
  • পর্যাপ্ত খাবার ও পানি
  • মা কবুতরের যত্ন
মা কবুতর প্রথম কয়েক সপ্তাহ বাচ্চাদের দুধ খাওয়ায়। এটি পুষ্টিকর ও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, বাচ্চাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত করতে হবে। যেকোনো অসুস্থতা দ্রুত শনাক্ত করতে হবে।

বাচ্চাদের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করা জরুরি। নিচের টেবিলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যেমন,

ভিটামিন/মিনারেল - উপকারিতা
ভিটামিন এ - চোখের স্বাস্থ্য
ভিটামিন ডি - হাড়ের বৃদ্ধি
ক্যালসিয়াম - হাড়ের মজবুত

পর্যাপ্ত খাবার ও যত্নে কবুতরের বাচ্চারা সুস্থ ও সবল হয়ে উঠবে। বাচ্চাদের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করলে কবুতরের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়

বেশি বাচ্চা দেয়া প্রজাতি

কবুতরের প্রজনন ক্ষমতা প্রজাতিভেদে ভিন্ন। কিছু প্রজাতি খুব বেশি বাচ্চা দেয়। হোমার কবুতর এদের মধ্যে অন্যতম। এই প্রজাতি প্রতি বছরে ৮ থেকে ১২টি বাচ্চা দেয়। এছাড়া ফ্যান্টেইল কবুতরও বেশি বাচ্চা দেয়। ফ্যান্টেইল কবুতর বছরে ৬ থেকে ১০টি বাচ্চা দিতে পারে। কিং কবুতরও উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা সম্পন্ন। এরা বছরে ৮ থেকে ১২টি বাচ্চা দেয়।

প্রজাতি - প্রতি বছরে বাচ্চা
হোমার কবুতর - ৮-১২টি 
ফ্যান্টেইল কবুতর - ৬-১০টি
কিং কবুতর - ৮-১২টি

জনপ্রিয় প্রজাতির তালিকা

অনেক প্রজাতির কবুতর জনপ্রিয়। নিচে কিছু পরিচিত প্রজাতির তালিকা দেয়া হলো। যেমন,
  • হোমার কবুতর
  • ফ্যান্টেইল কবুতর
  • কিং কবুতর
  • কারিয়ার কবুতর
  • টাম্বলার কবুতর
হোমার কবুতর বেশি জনপ্রিয়। এরা দ্রুতগতিসম্পন্ন। ফ্যান্টেইল কবুতরও জনপ্রিয়। এদের লম্বা লেজ থাকে। কিং কবুতর মাংসের জন্য পালন করা হয়। কারিয়ার কবুতর বার্তা পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। টাম্বলার কবুতর এরা আকাশে সুন্দর ভঙ্গিতে উড়ে।

কবুতরের ব্যবসায়িক দিক

কবুতর পালন থেকে আয়

কবুতর পালন থেকে আয় করা সম্ভব। এটি একটি সহজ এবং কম খরচের ব্যবসা। সঠিক পরিকল্পনা ও যত্নের মাধ্যমে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নিচে কিছু পয়েন্ট দেওয়া হলো,
  • সঠিক জাত নির্বাচন: বেশি বাচ্চা উৎপাদন করতে সক্ষম জাত নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • খাদ্য ও পুষ্টি: সুষম খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ করতে হবে।
  • বসবাসের ব্যবস্থা: পরিস্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
  • রোগ প্রতিরোধ: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে।
নিচের টেবিলে কিছু জাতের কবুতরের গড় বাচ্চা উৎপাদনের সংখ্যা দেওয়া হলো। যেমন,

কবুতরের জাত - গড় বাচ্চা উৎপাদন (প্রতি বছর)
হোমার - ৮-১০টি 
কিং - ১০-১২টি 
কার্নো - ১২-১৪টি 

বাজারে চাহিদা

বাজারে কবুতরের চাহিদা বাড়ছে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন,
  • খাদ্য হিসাবে ব্যবহার: কবুতরের মাংস সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।
  • পোষা প্রাণী হিসাবে: অনেকেই কবুতর পোষা প্রাণী হিসাবে পালন করেন।
  • দৌড় প্রতিযোগিতা: কবুতর দৌড় প্রতিযোগিতায় জনপ্রিয়।
বাজারে বিভিন্ন জাতের কবুতরের মূল্যও ভিন্ন। নিচের টেবিলে কিছু জাতের কবুতরের বাজার মূল্য দেওয়া হলো,

কবুতরের জাত - বাজার মূল্য (প্রতি জোড়া)
হোমার - ১৫০০-২০০০ টাকা
কিং - ২০০০-২৫০০ টাকা
কার্নো - ২৫০০-৩০০০ টাকা

এটি প্রমাণ করে যে, সঠিক যত্ন ও পরিকল্পনা নিয়ে কবুতর পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।

কবুতর পালনে সাধারণ ত্রুটি

পালনে ভুল

সঠিকভাবে কবুতর পালন না করলে উৎপাদন কমে যায়। কিছু সাধারণ ভুল যা কবুতর পালনে হয়। যেমন,
  • খাদ্যের অভাব: পর্যাপ্ত এবং সুষম খাদ্য না দিলে কবুতরের স্বাস্থ্য খারাপ হয়।
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা: আবর্জনা জমলে রোগজীবাণু জন্মায়। ফলে বাচ্চা উৎপাদন কমে।
  • অপর্যাপ্ত আলো: আলোর অভাবে কবুতরের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
  • আবাসন সমস্যা: সঠিক আকারের খাঁচা না হলে কবুতর আরাম পায় না। ফলে কম বাচ্চা দেয়।
তাছাড়া, পানির অভাব বা অস্বাস্থ্যকর পানি কবুতরের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

বাচ্চা হারানোর কারণ

বিভিন্ন কারণে কবুতর বাচ্চা হারাতে পারে। কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো,

কারণ - বিবরণ
রোগ - বিভিন্ন রোগ কবুতরের বাচ্চা হারানোর মূল কারণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।
খাদ্য - অপুষ্টিকর বা অপর্যাপ্ত খাদ্য বাচ্চার বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে।
আশ্রয় - অপর্যাপ্ত বা অস্বাস্থ্যকর আশ্রয়ে বাচ্চা বাঁচানো কঠিন।
পরিবেশখুব বেশি তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা কবুতরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

এই কারণগুলো দূর করতে সঠিকভাবে কবুতর পালন করা জরুরি। সঠিক যত্ন নিলে বাচ্চা হারানোর সম্ভাবনা কমে যায়।

সচরাচর জিজ্ঞাশিত প্রশ্ন এবং উত্তর (FAQ)

প্রশ্নঃ কবুতর বছরে কতবার বাচ্চা দেয়?
উত্তরঃ ৮ থেকে ১২ বার।

প্রশ্নঃ কবুতরের বাচ্চা কত বছর বয়সে চোখ খোলে?
উত্তরঃ ৪ থেকে ১০ দিনে।

প্রশ্নঃ কবুতর মিলনের কত দিন পর ডিম দেয়?
উত্তরঃ ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে।

প্রশ্নঃ প্রাকৃতিক উপায়ে কবুতরের পিএমভি রোগের চিকিৎসা?
উত্তরঃ পিএমভি রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই।

প্রশ্নঃ কবুতরের প্রিয় খাবার কি?
উত্তরঃ গম, চাউল, ধান, খুদ এবং সরিষা।

প্রশ্নঃ কবুতরের বাসা বানাতে কত সময় লাগে?
উত্তরঃ ৩ থেকে ৪ দিন।

প্রশ্নঃ কবুতর দ্রুত বড় করার উপায়?
উত্তরঃ সঠিক এবং পুষ্টিকর খাদ্যভ্যাস।

প্রশ্নঃ কবুতর দিনে কতটুকু খাবার খায়?
উত্তরঃ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম।

প্রশ্নঃ কবুতরের জন্য কোন টিকা ভালো?
উত্তরঃ প্যারামাইক্সোভাইরোসিস ও রোটাভাইরাসের সংমিশ্রণ টিকা।

প্রশ্নঃ কাঠ কবুতর কতদিন বাঁচে?
উত্তরঃ ৩-৫ বছর।

লেখকের মন্তব্য

আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি আপনাদের মাঝে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এবং কবুতর পালনের কৌশল সংক্রান্ত সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধদের মাঝে শেয়ার করুন।

জাতে করে আপনার মতো আপনাদের বন্ধুরাও উক্ত পোস্ট পড়ে উপকৃত হতে পারে। আর সর্বশেষ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url